
ভিভিআইপি ডিউটি করতে কক্সবাজার এসে জানতে পারি ,আমার ডিউটি পড়েছে উখিয়ার কুতুপালং রোহিংগা ক্যাম্পের সামনে। শুনেই খুশী হয়ে গেলাম কারন, আমিও চাইছিলাম কোন এক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আমার যেন ডিউটি হয়। মহান প্রভুর কাছে শোকরিয়া।
ভিভিআইপি আসার অনেক আগেই আমরা যার যার ডিউটি স্থানে পৌঁছাই। হাতে প্রাথমিক যা কাজ কর্ম ছিলো শেষ করেই চলে গেলাম মানবতার হাটে, যদি কিছু কেনাবেচা হয়।
কয়েক মা ও বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ কিনে দেওয়ার পরই চোখে পড়লো একজন অসুস্থ রোহিঙ্গা মা, তাকে কোন মতে তাঁর তিন মেয়ে চেষ্টা করেও রিকশায় তুলতে পারছেনা, কারন তিনি হাঁটতে পারছেন না, দাড়াতেও পারছেন না। এগিয়ে গেলাম কোলে করে রিকশায় তুলে হাসপাতাল (যা বিদেশি এনজিও কর্তৃক পরিচালিত,কুতুপালং বাজারের পাশেই) পৌঁছালাম।
মায়ের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে আমি যখন আমার ডিউটিস্থানে আসি তখন দেখি একজন দোভাষী এসে বল্লো স্যার আপনার সাথে একজন বিদেশি সাংবাদিক একটু কথা বলতে চায়। বললাম কেনো? সে বললো আপনি যে মহিলাটাকে কোলে করে রিকশায় তুলছিলেন তখন পুরাটাই তিনি ভিডিও করেছেন এবং ছবি তুলেছেন, মেজাজটা ধরেই গেছিলো আমাকে জিজ্ঞাসা না করে তিনি এই কাজটি করতে গেলেন কেনো। পুলিশের কাজইতো মানবতার জন্য কাজ করা, মানুষের জন্য কাজ করা। যাই হোক পরে সাংবাদিক সাহেব কোথাকার জানতে চাইলাম বললো চেকস্লোভাকিয়ার।
যেহেতু তাদের ভাষা ইংলিশ নয়, তাই তেমন কিছুই বুঝলাম না, দোভাষীর মাধ্যমে কুশল বিনিময় হলো, পরে বললো বাংলাদেশের পুলিশ অনেক ভালো। তোমার কাজ দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে এইটাই মানবতা। একটা ছবি তুলতে চায়-বল্লাম তুলতে পারেন। তার নাম পাবেলো। পুলিশের প্রসংসা শুনে মনটাই ভরে গেলো।
মনে মনে বললাম বাংলাদেশ পুলিশের একজন নগন্য সদস্য হতে পেরে আজ আমি সত্যিই গর্বিত। জয় হোক মানুষের, জয় হোক মানবতার। [লেখকের ফেসবুক থেকে নেওয়া]
পাঠকের মতামত